পেয়ারার বাজার - MASS TRAVEL

The Biggest Travel Group

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

Monday, April 16, 2018

পেয়ারার বাজার


ঝালকাঠি, বরিশাল ও পিরোজপুর—এই তিন জেলার সীমানার কাছাকাছি এলাকাজুড়ে আছে পেয়ারা বাগান। শুধু বাগানই নয়, পেয়ারার বেশ বড় ভাসমান বাজার রয়েছে এখানে। ধান-নদী-খাল—এই তিনে বরিশাল। একসময় বরিশাল অঞ্চলকে ‘বাংলার ভেনিস’ বলা হতো। এই বরিশাল দিনে দিনে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের কাছে। আর এই পেয়ারার ভাসমান বাজার পর্যটকদের কাছে এখন জনপ্রিয়।
ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার ডুমুরিয়া, কাপড়কাঠি, কাঁচাবালিয়া, ভীমরুলি, হিমানন্দকাঠি, শতদশকাঠি, রামপুর, মীরাকাঠি, শাওরাকাঠি, জগদীশপুর, আদমকাঠি এবং পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার আটগড়, কুরিয়ানা, বংকুরাসহ আরও কিছু গ্রামে প্রায় ২৪ হাজার একর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়। দেশে উৎপাদিত মোট পেয়ারার প্রায় ৮০ শতাংশই উৎপাদিত হয় এই অঞ্চলে।
আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে এসব এলাকার পেয়ারা বিক্রির মূল সময়। বিভিন্ন খালে খালে বসে এসব ভাসমান বাজার। এর মধ্যে অন্যতম আটগড় বাজার ও ভিমরুলী বাজার। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছোট্ট নৌকায় পেয়ারা নিয়ে আসেন চাষিরা। সেখান থেকে পেয়ারা কিনে নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারেরা। এই হাটে প্রতিদিন তিন হাজার মণের মতো পেয়ারা বিক্রি হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা। প্রতি মণ পেয়ারা বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়।


ভাসমান বাজারে গিয়ে দেখা গেল, খালগুলোতে একসঙ্গে অনেক নৌকা আর নৌকাভর্তি পেয়ারা। এ দৃশ্য দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। বর্ষার পানিতে টইটম্বুর খাল, খালের পাড়ে সবুজ প্রকৃতি আর নৌকায় সবুজ-হলুদ পেয়ারা। ছোট্ট নৌকা কিংবা ট্রলারে দুই পাশে পেয়ারা বাগানের মাঝখান দিয়ে খালে ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্যটাও বেশ উপভোগ্য। পেয়ারার ভাসমান এই বাজার ঘুরে আসার জন্য এখনই পরিকল্পনা করতে পারেন।
কীভাবে যাবেন
ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় হুলারহাটের উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়ে যায়। ভাড়া ডেক ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা। লঞ্চে উঠে নেছারাবাদ বা স্বরূপকাঠি নামতে হবে। এরপর ট্রলার ভাড়া নেবেন চার-পাঁচ ঘণ্টার জন্য। নেছারাবাদ খাল হয়ে আটঘর, কুরিয়ানা ঘুরে ভীমরুলি বাজার। ভিমরুলি বাজারে গিয়ে দেখবেন খালের মধ্য পেয়ারার শত শত নৌকা। ইচ্ছা করলে কিনতেও পারবেন পেয়ারা। এরপর আবার খানিকটা ঘুরে কুরিয়ানা বাজারে দুপুরের খাবার খেতে পারেন। কুরিয়ানা থেকে ভ্যানে করে রায়েরহাট এলে বরিশাল যাওয়ার বাস পাবেন। পথে গুঠিয়া মসজিদ ও দুর্গা সাগর দেখে বরিশাল গিয়ে ঢাকার লঞ্চ ধরতে পারবেন। আবার ঢাকা থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় লঞ্চ/স্টিমারে উঠে সকালে পৌঁছে যেতে পারেন বরিশাল অথবা ঢাকা থেকে বাসে বরিশাল গিয়ে সেখান থেকে অটোরিকশায় জগদীশপুর বাজার যেতে পারেন। এরপর ট্রলার রিজার্ভ করে সারা দিন ঘুরতে পারেন। ভাড়া পড়বে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা।
বাসে যেতে
ঢাকার গাবতলী থেকে সাকুরা পরিবহনের এসি বাস যায় ঝালকাঠি। ভাড়া ৮০০ টাকা। এ ছাড়া দ্রুতি, ঈগল, সুরভী ও সাকুরা পরিবহনের নন-এসি বাসও যায়, ভাড়া ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। সায়েদাবাদ থেকে ঝালকাঠি সদরে যাওয়ার জন্য রয়েছে সুগন্ধা পরিবহনের বাস। ঝালকাঠি জেলা সদর থেকে মোটরবাইকে ভাসমান বাজারে যেতে সময় লাগে প্রায় আধা ঘণ্টা। আর ইঞ্জিনচালিত নৌকায় গেলে সময় লাগে এক ঘণ্টা। ঝালকাঠি লঞ্চঘাট কিংবা কাঠপট্টি থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। ১০ জনের চলার উপযোগী একটি নৌকার সারা দিনের ভাড়া দেড় থেকে ২ হাজার টাকা। এই পথে মোটরবাইকের চেয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়াই ভালো। বরিশালের রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে খুলনাগামী ধানসিঁড়ি পরিবহনে উঠবেন। ঝালকাঠি পার হয়ে কীর্তিপাশা মোড়ে নামিয়ে দিতে বলবেন। ভাড়া নেবে ৬০ টাকা। সেখান থেকে অটোরিকশায় ভিমরুলি যেতে পাবেন ২০ থেকে ৩০ টাকায়।
কখন যাবেন?
জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর মাস পেয়ারার মৌসুম। এই সময়েই পেয়ারার ঐতিহ্যবাহী এই ভাসমান বাজারে ঘুরতে যাওয়ার উপযুক্ত সময়।
মজিবর রহমান
সূত্র – প্রথম আলো

No comments:

Post a Comment

Sponsorship